ডুয়ার্সের ” রায়মাতাং ” (অফবিট ডেস্টিনেশান) :-
ডুয়ার্সের বক্সা এলাকার পশ্চিমের একটি ছোট্ট ফরেস্ট ভিলেজ এই রায়মাতাং, যার দূরত্ব শিলিগুড়ি থেকে প্রায় 146 কিমি। বক্সা টাইগার রিজার্ভের অন্তর্গত এই গ্রামটি ঘন জঙ্গলের প্রাকৃতিক রূপসৌন্দর্য্যের আশীর্বাদে গত কয়েক বছর যাবত ডুয়ার্সের পর্যটনশিল্পে নিজস্ব জায়গা করে নিয়েছে।বক্সা ফরেস্টের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত রায়মাতাং নদী এবং তাকে ঘিরে উদ্ভূত গভীর ফরেস্ট , তার পাশাপাশি ছড়িয়ে থাকা বিস্তীর্ণ চা বাগানের নিস্তব্ধতা এবং সুউচ্চ পাহাড়ের মৌনমুগ্ধতা- সবকিছু মিলিয়ে শান্তপ্রিয়, মানসিক অবসাদমুক্ত এক স্বস্তির গন্তব্য। ভুটান বর্ডারের একদম কাছে , আলিপুরদুয়ার হতে 45 কিমির মধ্যে এর অবস্থান ।এই ফরেস্টে ফ্লোরা এবং ফনার অর্থাৎ উদ্ভিদকুল এবং বন্য প্রাণীজগতের যে অনিবার্য জীবন আবর্তন রয়েছে তা গভীরভাবে পরিলক্ষিত হয়। এই ফরেস্টটি মাদার নেচারের মতো এদেরকে প্রতিপালন করে চলেছে। রায়মাতাং এর ওয়াচ্ টাওয়ার থেকে বক্সা টাইগার রিজার্ভের বন্যজীবন এবং প্রসারিত স্বচ্ছ নদীগর্ভের প্যানরোমিক দৃশ্য পর্যবেক্ষণ করা যায়। বক্সার ঘন বৃষ্টির বনাঞ্চলের মধ্য দিয়ে ভ্রমণকালে বন্যপ্রাণীদের পায়ের ছাপ দেখা যেতে পারে ।এছাড়া এখানে বক্সা ন্যাশনাল পার্কে জঙ্গল সাফারী, রায়মাতাং নদীতে ছিপ দিয়ে মাছ ধরা, নদীগর্ভে ভ্রমণ করা যাবে।শিংওয়ালা ঠোঁটযুক্ত পক্ষী, ব্ল্যাক সারস পাখি, চন্দ্রাল তিরি,ধূসর হেরন প্রভৃতি প্রায় 284 প্রজাতির পাখিদের বাসস্থান এই ফরেস্ট ,তাই একে পাখিদের স্বর্গরাজ্য বললেও ভূল হবে না। কাছাকাছি লেপচখা ভিলেজ ভ্রমণকালে ভূটানের পাহাড়, বক্সা ন্যাশনাল পার্ক এবং ডুয়ার্সের 12 টি পাহাড়ী নদীর চঞ্চল প্রবাহের ধারাবাহিকতা দর্শন করা যাবে। সূর্যাস্তে অবসন্ন সন্ধ্যায় নদীগর্ভে পায়চারির সময় সাক্ষাৎ মিলবে শত শত রঙিন প্রজাপতির। নিস্তব্ধ রাতে পেঁচার ডাক এবং ঝিঁ ঝিঁ পোকার আওয়াজ চন্দ্রালোকিত ফরেস্টে এক রহস্যময় বায়ুমন্ডল রচনা করবে, যা আপনাকে সারাজীবন লালিত করবে।শীতকালে নভেম্বর থেকে মিড জানুয়ারি এখানে আসার জন্য সবচাইতে ভালো সিজেনটাইম।
